মিন্নির বাবা দিলেন নতুন তথ্য, রহস্য আরও বেড়েছে!

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড নিয়ে একে একে বেরিয়ে আসছে নতুন সব তথ্য। এই মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের মা গতকাল (শনিবার) জানিয়েছেন, মিন্নির সঙ্গে নয়নের গোপন যোগাযোগ ছিল। রিফাত হত্যার আগের দিনও মিন্নি তাদের বাড়িতে গিয়েছিল।

গতকাল রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফও সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মিন্নিই ঘটনার মূলহোতা। কিন্তু মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর দিলেন নতুন আরেক তথ্য। এতে রিফাত হত্যা নিয়ে রহস্য আরও বেড়ে গেছে।

মোজাম্মেল হোসেন বলেছেন, ‘রিফাতের ওপর হামলার পর আমি রিফাতকে আমার খরচে বরিশাল নিয়ে যাই। বরিশাল নেয়ার পর সেখানে কিছু লোক আমার ওপর হামলা করে। সেইসব হামলাকারীদের প্ররোচনাতেই রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ এখন মিন্নিকে হত্যার জন্য দায়ী করছেন।’

মিন্নির বাবার কথায় এখন এই প্রশ্নটাও উঠছে যে, রিফাত হত্যার বিষয়টিকে কি কেউ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছে? যদি সেটা হয়েই থাকে, তবে তারা কারা? কোনো কিছু ধামাচাপা দিয়ে মিন্নিকেই কি সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে? তবে মিন্নির বাবা তাকে মারধরের কথা জানালেও কারা মারধর করেছে সেটা জানাননি। তিনি কতটুকু সত্যি সেটা নিয়েও সন্দেহ জাগছে।

সাংবাদিকরা মিন্নির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মোজাম্মেল হোসেন জানান তার মেয়ে অসুস্থ থাকায় সে এখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, রিফাত হত্যার পর থেকে মিন্নি তো নিয়মিতভাবেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তাহলে হত্যার সঙ্গে তার যোগসাজশের বিষয়টি সামনে আসতেই তিনি কেন ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়লেন?

আরেকটি বিষয় হলো, রিফাত হত্যাকাণ্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ায় মিন্নির সঙ্গে বারবার কথা বলতে চেয়েছে পুলিশ। কিন্তু অসুস্থতার অজুহাতে মিন্নি পুলিশের সঙ্গেও কোনো কথা বলেননি। রিফাত হত্যার পর থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বললেও পুলিশকে এড়িয়ে গেছেন মিন্নি।

রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি মিন্নিকে দায়ী করেছেন। মিন্নিকে দ্রুত গ্রেপ্তারেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মিন্নির বাবা বলেন, ‘দুলাল শরীফের মাথা ঠিক নেই তিনি হার্টের রোগী। এ কারণে তিনি ভুলভাল বকছেন। তার কথার কোনো ভিত্তি নেই। তার কথায় কান দেয়ারও কিছু নেই।’

মিন্নির বাবা কিশোর আরও বলেন, ‘আমার মেয়েটি বিধবা হয়েছে। মেয়ে জামাইয়ের জন্য আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। ভিডিও ফুটেজে রিফাত শরীফকে বাঁচানোর আপ্রাণ প্রচেষ্টা দেখে হাজার হাজার মানুষ আমার মেয়ে মিন্নিকে বাহবা দিয়েছে। আমার মেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রিফাতকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। তারপরও আমার মেয়ে ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছে রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ।’

মিন্নিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘রিফাত হত্যা মামলাটি স্পর্শকাতর। মামলাটি আমরা অত্যন্ত গুরত্ব সহকারে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছি। এ হত্যাকাণ্ডে যে জড়িত থাকবে পুলিশ তাকে আইনের আওতায় আনতে বদ্ধ পরিকর।’

বিডিটাইমস৩৬৫ডটকম/